ঢাকা ০১:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুমড়া বড়ি তৈরি করে সংসার চালান নারীরা

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:১১:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে
নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুমড়া বড়ি তৈরি করে সংসার চালান নারীরা। কুমড়ার বড়ি তৈরি করে সংসার চলে নড়াইলের ব্রাহ্মনডাঙা গ্রামের নারীদের। কলাই ডাল বেটে তাতে চাল-কুমড়া মিশিয়ে তৈরি হয় এই বড়ি। প্রতি বছরই কার্তিক থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত গ্রামটিতে ধুম পড়ে যায় বড়ি তৈরি করার কাজে। বছরের এই ৫ মাস বেশির ভাগ পরিবারগুলোর আয়ের একমাত্র উৎস এই বড়ি বিক্রি। ডালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রয় মূল্য না বাড়লে বড়ি উৎপাদন করা দুরুহ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তারা। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, কারিগর মিনতি কুন্ডু জানান, বাজার থেকে ডাল ক্রয় করে রাতে ভিজেয়ে কাক ডাকা ভোরে সে ডাল মেশিনে ভাঙিয়ে উজ্জল রোদে ডাল ও চাল-কুমড়ার মিশ্রণ রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় কুমড়া বড়ি। নরম অবস্থায় এগুলো পাতলা কাপড়ে ও মাচায় সারি সারি করে রোদে রাখা হয় শুকানোর জন্য। ভালো করে শুকিয়ে তা বাজারে বিক্রয় করা হয়। কাছেই রুপগঞ্চ বাজারে আমরা এগুলো বিক্রি করি কখনো ৩০ টাকা কখনো ৫০ টাকা প্রতি কেজিতে লাভ হয়। এখন আগের মতো লাভ হয় না প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। এই বিক্রি আমাদের সংসার চলে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি বিক্রয় করতে পারি। এতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা থাকে। এই কাজে আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা সাহায্য করে।
মিনতি আরও জানান, ১০-১২ বছর আমি এই কুমড়ো বড়ি তৈরি করি, এতে সংসার খুব একটা ভালোভাবে চলে না। এইকাজ শিখেছি তাই করি।
নারী উদ্যেক্তা নন্দিতা বোস বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কুমড়ো বড়ি বাজারের অন্য পন্যের তুলনায় দামের দিক থেকে অনেক কম। ভালো বাজার পেলে সারাদেশে তুমুল জনপ্রিয় এই খাবার বিক্রি করি গ্রামের এই নারীরাও স্বাবলম্বী হতে পারবে। নড়াইল সদর উপজেলার ব্রাহ্মনডাঙ্গা গ্রামের অনেক নারী এই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অনেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এই কাজ করছেন।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রোকনুজ্জামান বলেন, বাংলার ঐতিহ্য কুমড়ার বড়ি, সারাদেশে তুমুল জনপ্রিয় মূল উপকরণ চাল-কুমড়া, মাসকলাই যা নড়াইলে ব্যাপক চাষাবাদ হয়। এ ক্ষেত্রে গ্রামের মহিলারা এই কাজে আত্মনিয়োগ করে তারা যে কুমড়ার বড়ি তৈরি করছেন এতে তাদের যেমন কার্মসংস্থান হচ্ছে সেই সঙ্গে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। উন্নিতবাজার ব্যবস্থা ও কারিগরি সহযোগিতা পেলে তারা আরও উৎসাহী হয়ে এই কাজে আত্মনিয়োগ করবে। এই কার্যক্রম যদি আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারি বাজার ব্যবস্থা উন্নত করতে পারি তাহলে অনেকেই এই কাজে এগিয়ে আসবে।
বর্তমানে প্রতি কেজি বড়ি তারা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে বিক্রি করে থাকেন। যেখানে প্রতি কেজি ডালের বাজার মূল্য ১৫০ থেকে দুই শ’ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি বড়ি বিক্রয় করে ৩০ থেকে ৫০ টাকা লাভ হয়। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ কেজি বিক্রয় করেন বলে জানান এই কাজে নিয়েজিত নারীরা।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
39
অনলাইন জরিপ

জামায়াত বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করায় বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য ইসলামী ধারার দলগুলোর দূরত্ব কমার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন কি?

ব্রেকিং নিউজ

নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুমড়া বড়ি তৈরি করে সংসার চালান নারীরা

আপডেট সময় : ০৪:১১:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুমড়া বড়ি তৈরি করে সংসার চালান নারীরা। কুমড়ার বড়ি তৈরি করে সংসার চলে নড়াইলের ব্রাহ্মনডাঙা গ্রামের নারীদের। কলাই ডাল বেটে তাতে চাল-কুমড়া মিশিয়ে তৈরি হয় এই বড়ি। প্রতি বছরই কার্তিক থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত গ্রামটিতে ধুম পড়ে যায় বড়ি তৈরি করার কাজে। বছরের এই ৫ মাস বেশির ভাগ পরিবারগুলোর আয়ের একমাত্র উৎস এই বড়ি বিক্রি। ডালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রয় মূল্য না বাড়লে বড়ি উৎপাদন করা দুরুহ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তারা। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, কারিগর মিনতি কুন্ডু জানান, বাজার থেকে ডাল ক্রয় করে রাতে ভিজেয়ে কাক ডাকা ভোরে সে ডাল মেশিনে ভাঙিয়ে উজ্জল রোদে ডাল ও চাল-কুমড়ার মিশ্রণ রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় কুমড়া বড়ি। নরম অবস্থায় এগুলো পাতলা কাপড়ে ও মাচায় সারি সারি করে রোদে রাখা হয় শুকানোর জন্য। ভালো করে শুকিয়ে তা বাজারে বিক্রয় করা হয়। কাছেই রুপগঞ্চ বাজারে আমরা এগুলো বিক্রি করি কখনো ৩০ টাকা কখনো ৫০ টাকা প্রতি কেজিতে লাভ হয়। এখন আগের মতো লাভ হয় না প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। এই বিক্রি আমাদের সংসার চলে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি বিক্রয় করতে পারি। এতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা থাকে। এই কাজে আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা সাহায্য করে।
মিনতি আরও জানান, ১০-১২ বছর আমি এই কুমড়ো বড়ি তৈরি করি, এতে সংসার খুব একটা ভালোভাবে চলে না। এইকাজ শিখেছি তাই করি।
নারী উদ্যেক্তা নন্দিতা বোস বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কুমড়ো বড়ি বাজারের অন্য পন্যের তুলনায় দামের দিক থেকে অনেক কম। ভালো বাজার পেলে সারাদেশে তুমুল জনপ্রিয় এই খাবার বিক্রি করি গ্রামের এই নারীরাও স্বাবলম্বী হতে পারবে। নড়াইল সদর উপজেলার ব্রাহ্মনডাঙ্গা গ্রামের অনেক নারী এই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অনেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এই কাজ করছেন।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রোকনুজ্জামান বলেন, বাংলার ঐতিহ্য কুমড়ার বড়ি, সারাদেশে তুমুল জনপ্রিয় মূল উপকরণ চাল-কুমড়া, মাসকলাই যা নড়াইলে ব্যাপক চাষাবাদ হয়। এ ক্ষেত্রে গ্রামের মহিলারা এই কাজে আত্মনিয়োগ করে তারা যে কুমড়ার বড়ি তৈরি করছেন এতে তাদের যেমন কার্মসংস্থান হচ্ছে সেই সঙ্গে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। উন্নিতবাজার ব্যবস্থা ও কারিগরি সহযোগিতা পেলে তারা আরও উৎসাহী হয়ে এই কাজে আত্মনিয়োগ করবে। এই কার্যক্রম যদি আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারি বাজার ব্যবস্থা উন্নত করতে পারি তাহলে অনেকেই এই কাজে এগিয়ে আসবে।
বর্তমানে প্রতি কেজি বড়ি তারা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে বিক্রি করে থাকেন। যেখানে প্রতি কেজি ডালের বাজার মূল্য ১৫০ থেকে দুই শ’ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি বড়ি বিক্রয় করে ৩০ থেকে ৫০ টাকা লাভ হয়। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ কেজি বিক্রয় করেন বলে জানান এই কাজে নিয়েজিত নারীরা।