ঢাকা ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নীলফামারীতে গোবরের তৈরী লাঠি মেটাচ্ছে জ্বালানীর চাহিদা

মো: রায়হান ইসলাম নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০৭:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে
একটা সময়ে গ্রাম অঞ্চলে গাছের লতাপাতা কুড়িয়ে জ্বালানীর প্রয়োজন মেটাতো গ্রামীণ বধূরা। ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আড়া-জঙ্গল নিধন করে ভূমি তৈরি করা হচ্ছে। আর ওই ভূমিতে ফসল উৎপাদনসহ বসবাস শুরু করেছে ভূমি-জঙ্গল মালিকরা। এ কারণে বিলুপ্তির পথে বনাঞ্চল বা আড়া-জঙ্গল। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষদের রান্না কাজে দেখা দেয় জ্বালানি খড়ির সংকট। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহবধূরা নিজের গাছের খড়ি বা গ্যাস দিয়ে রান্না করতে পারলেও চরম বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের বধূরা।
নীলফামারীতে জ্বালানি হিসেবে কাঠের বিকল্প হিসেবে গোবরের লাঠির চাহিদা বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে শুকনো মৌসুমে গোবর লাঠিতে পেঁচিয়ে শুকিয়ে সারা বছর ব্যবহার করা যায় এই লাঠি।
সেই গোবর দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে লাকড়ি/খড়ি। সাশ্রয়ী জ্বালানী ব্যবহারের জন্য গরুর গোবরের তৈরি লাকড়ি নীলফামারীর গ্রামাঞ্চলের গরিব গৃহবধূদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই সম্প্রতি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরির ধুম পড়েছে।
জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত পরিবারের বধূরা গৃহপালিত গরুর গোবরের লাকড়ি তৈরিতে মেতে উঠেছেন। তারা সকালে ঘুম জেগে গোয়াল ঘরে প্রবেশ করেন। ডালি ভর্তি বের করেন গোবর। গোবরের সাথে মিশ্রিত করা হয় আংশিক পরিমাণের ধানের তুষ। এরপর ২/৩ফুট লম্বা বাঁশের চিকন লাঠি আকারের বা পাটের শলা দিয়ে বধূরা তৈরি করেছেন লাকড়ি।
এসব তৈরিকৃত কাঁচা লাকড়িগুলো শুকানোর জন্য বাড়ির উঠানে রোদে দাঁড় করে রাখা হয়। রোদের তাপমত্রা থাকলে ২/৩দিন পরই শুকিয়ে যায় লাকড়িগুলো। এভাবে নিত্যদিনের তৈরি শুকনো লাকড়ি মজুদ রাখা হয় নিজ ঘরে।
পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের কাছারি পাড়া গ্রামের গৃহবধু ফেন্সি ও মহিলা বেগম জানান, আমরা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই গোবরের তৈরী লাঠি দিয়ে সব ধরনের রান্নার কাজ করে আসছি। এটি তৈরী করতে আমাদের আর্থিক খরচ লাগে না। শুল্ক মৌসুমে আমরা অতিরিক্ত পরিমানে গোবরের লাঠি তৈরী করে মজুদ রাখি এবং বর্ষাকালে নিশ্চিন্তে সেগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করি।
এবং তারা এলাকার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে গোবর কুড়িয়ে লাঠি তৈরী করে জ্বালানীর চাহিদা মেটাচ্ছেন এবং অনেকে গোবরের লাঠি তৈরী করে তা বিক্রি করেও বেশ ভালোই উপার্জন করেন।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
39
অনলাইন জরিপ

জামায়াত বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করায় বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য ইসলামী ধারার দলগুলোর দূরত্ব কমার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন কি?

ব্রেকিং নিউজ

নীলফামারীতে গোবরের তৈরী লাঠি মেটাচ্ছে জ্বালানীর চাহিদা

আপডেট সময় : ০৭:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪
একটা সময়ে গ্রাম অঞ্চলে গাছের লতাপাতা কুড়িয়ে জ্বালানীর প্রয়োজন মেটাতো গ্রামীণ বধূরা। ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আড়া-জঙ্গল নিধন করে ভূমি তৈরি করা হচ্ছে। আর ওই ভূমিতে ফসল উৎপাদনসহ বসবাস শুরু করেছে ভূমি-জঙ্গল মালিকরা। এ কারণে বিলুপ্তির পথে বনাঞ্চল বা আড়া-জঙ্গল। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষদের রান্না কাজে দেখা দেয় জ্বালানি খড়ির সংকট। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহবধূরা নিজের গাছের খড়ি বা গ্যাস দিয়ে রান্না করতে পারলেও চরম বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের বধূরা।
নীলফামারীতে জ্বালানি হিসেবে কাঠের বিকল্প হিসেবে গোবরের লাঠির চাহিদা বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে শুকনো মৌসুমে গোবর লাঠিতে পেঁচিয়ে শুকিয়ে সারা বছর ব্যবহার করা যায় এই লাঠি।
সেই গোবর দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে লাকড়ি/খড়ি। সাশ্রয়ী জ্বালানী ব্যবহারের জন্য গরুর গোবরের তৈরি লাকড়ি নীলফামারীর গ্রামাঞ্চলের গরিব গৃহবধূদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই সম্প্রতি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরির ধুম পড়েছে।
জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত পরিবারের বধূরা গৃহপালিত গরুর গোবরের লাকড়ি তৈরিতে মেতে উঠেছেন। তারা সকালে ঘুম জেগে গোয়াল ঘরে প্রবেশ করেন। ডালি ভর্তি বের করেন গোবর। গোবরের সাথে মিশ্রিত করা হয় আংশিক পরিমাণের ধানের তুষ। এরপর ২/৩ফুট লম্বা বাঁশের চিকন লাঠি আকারের বা পাটের শলা দিয়ে বধূরা তৈরি করেছেন লাকড়ি।
এসব তৈরিকৃত কাঁচা লাকড়িগুলো শুকানোর জন্য বাড়ির উঠানে রোদে দাঁড় করে রাখা হয়। রোদের তাপমত্রা থাকলে ২/৩দিন পরই শুকিয়ে যায় লাকড়িগুলো। এভাবে নিত্যদিনের তৈরি শুকনো লাকড়ি মজুদ রাখা হয় নিজ ঘরে।
পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের কাছারি পাড়া গ্রামের গৃহবধু ফেন্সি ও মহিলা বেগম জানান, আমরা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই গোবরের তৈরী লাঠি দিয়ে সব ধরনের রান্নার কাজ করে আসছি। এটি তৈরী করতে আমাদের আর্থিক খরচ লাগে না। শুল্ক মৌসুমে আমরা অতিরিক্ত পরিমানে গোবরের লাঠি তৈরী করে মজুদ রাখি এবং বর্ষাকালে নিশ্চিন্তে সেগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করি।
এবং তারা এলাকার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে গোবর কুড়িয়ে লাঠি তৈরী করে জ্বালানীর চাহিদা মেটাচ্ছেন এবং অনেকে গোবরের লাঠি তৈরী করে তা বিক্রি করেও বেশ ভালোই উপার্জন করেন।