ঢাকা ১২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভেড়ামারায় জীবন যুদ্ধে হার না মানা মানুষের গল্প

স্বদেশে বার্তা ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

আমরা অনেকেই মন্দ ভাগ্যের জন্য কপালের দোষ দেই। মাত্রা অতিরিক্ত আফসোস করি। কিন্তু ভাগ্য তো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। তিনি যেমন মানুষকে বিপদ/মসিবত দেন তেমনি তা থেকে তিনি উদ্ধার করেন। তাই সুখে-দুঃখে বিপদে-আপদে সর্বদা আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করা উচিত। জায়গায় বসে দোকান করলে অনেক জায়গার দরকার, অনেক টাকার দরকার।

মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার বয়স ৯০ পিতা বেঁচে নেই মৃত অটল মন্ডল অনেক আগে মারা গেছেন। আব্দুস সাত্তার এর সংসারে ৬ ছেলে ৪ মেয়ে সবারই বিয়ে হয়ে গেছে। নিজের বলতে তেমন কোন জমি, জায়গা, অর্থ, সম্পদ নেই। বাড়ি চরদামুকদিয়া বাহিরচর ইউনিয়ন, উপজেলা ভেড়ামারা, জেলা কুষ্টিয়া। বয়স্ক ভাতা পান, স্ত্রীর বয়স্ক ভাতার কার্ড এখনো পাই নাই। এ বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

মোঃ আব্দুল সাত্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ছেলে-মেয়েরা দেখে না। তাই জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের সামান্য পুঁজি নিয়ে বাজারে পাড়া মহল্লায় ঘর ঝাড়ু দেওয়ার উপকরণ ঝাড়ু বিক্রি করে থাকি। বয়সের ভারে ঠিকমতো হাঁটতে পারি না তারপরও দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জন্য ঘুরে বেড়াতে হয়। ৬ নম্বর ছেলে দেখে তাই কোন রকম বেঁচে আছি তা না হলে এই ঝাড়ু বিক্রির টাকায় সংসার চালানো খুব কষ্ট হয়ে যেত। আগে এক সময় জমি চাষাবাদ করতাম। তারপর নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে দিনমজুরির কাজ করতাম। এখন আর পারিনা। ছেলে-মেয়েদের মানুষ করতে বিয়ে দিতে যেয়ে নিজের জন্য কিছুই করতে পারি নাই। অভাব অনটনে সংসারে ছেলে-মেয়েদের ভালোভাবে লেখাপড়া করাতে পারি নাই। কোন ছেলে মেয়ে খোঁজ রাখে না। মাঝেমধ্যে ৬ নম্বর ছেলেটা কিছু দেয় আর আমি প্রতিদিন ঝাড়ু বিক্রি করে যেটুকু আয় করি তাতে আমাদের কোন রকম চলে যায়। আমি ভাতা পায় আমার স্ত্রীর ভাতাটা যদি কেউ ব্যবস্থা করে দিত তাহলে অনেকটা কষ্টের লাঘব ঘটতো। আব্দুস সাত্তারের ইচ্ছা, শক্তি, চেষ্টা অনেককে অনুপ্রেরিত করে। ভিক্ষাবৃত্তি বেছে না নিয়ে ছেলে-মেয়েদের খাবার যোগান দেওয়া, মানুষ করা, বিয়ে দেওয়া হার না মানা এক বাবার জীবন যুদ্ধ।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
39
অনলাইন জরিপ

জামায়াত বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করায় বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য ইসলামী ধারার দলগুলোর দূরত্ব কমার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন কি?

ব্রেকিং নিউজ

ভেড়ামারায় জীবন যুদ্ধে হার না মানা মানুষের গল্প

আপডেট সময় : ০৯:৫৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

আমরা অনেকেই মন্দ ভাগ্যের জন্য কপালের দোষ দেই। মাত্রা অতিরিক্ত আফসোস করি। কিন্তু ভাগ্য তো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। তিনি যেমন মানুষকে বিপদ/মসিবত দেন তেমনি তা থেকে তিনি উদ্ধার করেন। তাই সুখে-দুঃখে বিপদে-আপদে সর্বদা আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করা উচিত। জায়গায় বসে দোকান করলে অনেক জায়গার দরকার, অনেক টাকার দরকার।

মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার বয়স ৯০ পিতা বেঁচে নেই মৃত অটল মন্ডল অনেক আগে মারা গেছেন। আব্দুস সাত্তার এর সংসারে ৬ ছেলে ৪ মেয়ে সবারই বিয়ে হয়ে গেছে। নিজের বলতে তেমন কোন জমি, জায়গা, অর্থ, সম্পদ নেই। বাড়ি চরদামুকদিয়া বাহিরচর ইউনিয়ন, উপজেলা ভেড়ামারা, জেলা কুষ্টিয়া। বয়স্ক ভাতা পান, স্ত্রীর বয়স্ক ভাতার কার্ড এখনো পাই নাই। এ বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

মোঃ আব্দুল সাত্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ছেলে-মেয়েরা দেখে না। তাই জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের সামান্য পুঁজি নিয়ে বাজারে পাড়া মহল্লায় ঘর ঝাড়ু দেওয়ার উপকরণ ঝাড়ু বিক্রি করে থাকি। বয়সের ভারে ঠিকমতো হাঁটতে পারি না তারপরও দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জন্য ঘুরে বেড়াতে হয়। ৬ নম্বর ছেলে দেখে তাই কোন রকম বেঁচে আছি তা না হলে এই ঝাড়ু বিক্রির টাকায় সংসার চালানো খুব কষ্ট হয়ে যেত। আগে এক সময় জমি চাষাবাদ করতাম। তারপর নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে দিনমজুরির কাজ করতাম। এখন আর পারিনা। ছেলে-মেয়েদের মানুষ করতে বিয়ে দিতে যেয়ে নিজের জন্য কিছুই করতে পারি নাই। অভাব অনটনে সংসারে ছেলে-মেয়েদের ভালোভাবে লেখাপড়া করাতে পারি নাই। কোন ছেলে মেয়ে খোঁজ রাখে না। মাঝেমধ্যে ৬ নম্বর ছেলেটা কিছু দেয় আর আমি প্রতিদিন ঝাড়ু বিক্রি করে যেটুকু আয় করি তাতে আমাদের কোন রকম চলে যায়। আমি ভাতা পায় আমার স্ত্রীর ভাতাটা যদি কেউ ব্যবস্থা করে দিত তাহলে অনেকটা কষ্টের লাঘব ঘটতো। আব্দুস সাত্তারের ইচ্ছা, শক্তি, চেষ্টা অনেককে অনুপ্রেরিত করে। ভিক্ষাবৃত্তি বেছে না নিয়ে ছেলে-মেয়েদের খাবার যোগান দেওয়া, মানুষ করা, বিয়ে দেওয়া হার না মানা এক বাবার জীবন যুদ্ধ।